reebokcrossfitone.com
RSS

বিবেকানন্দের জীবনী | Swami Vivekananda Biography in Bengali

September 17, 2020 by maximios • Quotes

বিবেকানন্দের জীবনী
Swami Vivekananda Biography

নাম

নরেন্দ্রনাথ দত্ত/Swami Vivekananda

জন্ম

১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ (কোলকাতা)

অভিভাবক

বিশ্বনাথ দত্ত (বাবা)
ভুবনেশ্বরী দেবী (মা)

প্রতিষ্ঠাতা

রামকৃষ্ণ মিশন
রামকৃষ্ণ মঠ

জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম

রাজযোগ, কর্মযোগ, ভক্তিযোগ, জ্ঞানযোগ

আধ্যাত্মিক গুরু

শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস

জাতীয়তা

ভারতীয়

ধর্ম

হিন্দু

উপাধি

স্বামীজি

মৃত্যু

৪ জুলাই ১৯০২

মৃত্যুস্থান

বেলুড় মঠ, হাওড়া

ব্লগটি পড়তে না ভালো লাগলে এর অডিও ভার্সানটি শুনুন এবং অবশ্যই সেটিকে follow করুন এখানে ক্লিক করে…

বাংলা তথা সমগ্র ভারতবর্ষের সবচেয়ে বিখ্যাত দার্শনিক ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ | তিনি একজন দার্শনিক ছাড়াও ছিলেন লেখক ও সঙ্গীতজ্ঞ মানুষও | তাঁর লেখা প্রত্যেকটা বই আজও সকল বাঙালী তথা সমগ্র দেশবাসীকে সমানভাবে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত করে চলেছে |

স্বামীজি এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন যাঁর উচ্চ চিন্তাধারা, আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা প্রত্যেক মানুষের মনে এক গভীর ছাপ ফেলেছিলো | তাঁর অভূতপূর্ব দূরদর্শী মনোভাব ভারতের বিকাশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেইসময় |

আমরা হয়তো এটা সবাই জানি, তাঁর স্বভাব ছিলো খুব দুয়ালু প্রকৃতির | তিনি সাধারণ মানুষ ছাড়াও অনান্য জীবদেরও সমানভাবে ভালোবাসা দিতেন | তিনি সর্বদা সবাইকে, প্রত্যেক জীবকে সমানভাবে ভালোবাসা দেওয়ার কথাও বলতেন | কারণ তাঁর মতানুযায়ী প্রত্যেক জীবের মধ্যেই ঈশ্বর বিরাজ করেন |

স্বামীজি এছাড়াও ভাতৃপ্রীতি ও সবাইকে ভালোবাসা দেওয়ার নীতিতেও বিশ্বাসী ছিলেন | তিনি মনে করতেন, ভাতৃপ্রীতি ও সদ্ভাবের দ্বারা প্রত্যেকটা মানুষ তার জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে |

তিনি এছাড়াও একজন প্রবল আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি ছিলেন এবং সকলের উদ্দেশ্যে একসময় বলেছিলেন – “যতক্ষণ না আপনি নিজের উপর বিশ্বাস করতে পারবেন, ততক্ষণ অবধি আপনি ইশ্বরকেও বিশ্বাস করতে পারবেন না”

Swami Vivekananda Life History:

স্বামী বিবেকানন্দ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১২ জানুয়ারি ১৮৬৩ সালে, উত্তর কলকাতার শিমুলিয়া গ্রামের বিখ্যাত দত্ত পরিবারে | তাঁর বাবার নাম ছিলো বিশ্বনাথ দত্ত, যিনি কিনা কলকাতা হাইকোর্টের একজন আইনজীবি ছিলেন এবং মায়ের নাম ছিলো ভুবনেশ্বরী দেবী, যিনি ছিলেন সাধারণ এক গৃহবধু |

বিবেকানন্দদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছিলো মোট ৯ জন | তাঁর ভাই মহেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও বিদেশ ভ্রমণে বিবেকানন্দের সঙ্গী এবং তাঁর ছোট ভাই ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন সেইসময়ের একজন বিশিষ্ট সাম্যবাদী নেতা |

জানা যায়, ছোটবেলা থেকে স্বামীজির মনে আধ্যাত্মিক ভাবকে সর্বপ্রথম জাগ্রত করার পিছনে তাঁর মা ভুবনেশ্বরী দেবীরই সর্বপ্রথম হাত ছিলো | তিনি খুব ধার্মিক নারী ছিলেন | হিন্দুশাস্ত্র, রামায়ণ ও মহাভারতের বিষয়ে তাঁর পান্ডিত্ব ছিলো প্রচুর | এছাড়াও তিনি সেই সময়কার মহিলা হয়েও ইংরাজী ভাষা ভালোই বুঝতে ও একটু আধটু বলতেও পারতেন |

বর্তমানে স্বামীজির মহান চরিত্র সম্বন্ধে আমরা যে জানতে পাই, সেটা গড়ে তোলার পিছনে ভুবনেশ্বরী দেবী ও বিশ্বনাথ দত্তের অবদান ছিলো প্রচুর | কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা অনেক মানুষই আজ এই সম্পর্কে জানি না |

সে যাই হোক, আমরা আবার আসল কথায় ফিরে আসি |

ছোটবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার দিকে নরেন্দ্রনাথ দত্ত ওরফে বিবেকানন্দদের যে আগ্রহ ফুটে ওঠে, সেই কথাতো আমি তোমাকে আগেই জানালাম ।

Real Photos of Swami Vivekananda

সেইসময় সময় তিনি বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তির সামনে প্রায়ই ধ্যানে বসতেন আর নানা সাধু-সন্ন্যাসীদের প্রতিও আগ্রহ রাখতেন ভীষনভাবে । ছোটবেলায় তিনি এতটাই দুরন্ত ছিলেন যে তার বাবা-মার পক্ষে তাকে সামলানো মাঝে মাঝেই দুঃসাধ্য হয়ে উঠত ।

শোনা যায় তাঁর মা সর্বদা বলতেন – “শিবের কাছে ছেলে চাইলুম, তা তিনি নিজে না এসে পাঠালেন তার চেলা এক ভূতকে”

তুমি কি জানো? ছোট্ট নরেন্দ্রনাথ দুষ্টু হওয়া সত্বেও কিন্তু ছিলো একজন ভীষন প্রখর বুদ্ধিশীল মানুষ ও সাহসী | তাঁর ভীতর এক অদ্ভুত প্রতিভা ছিলো, যাকে সে একবার দেখতো তাঁকে কোনোদিনও ভুলতো না এবং যেটা একবার পড়তো সেই বিষয়ও তাঁর সারাজীবন মনে থাকতো |

সত্যি ! কেউ ভাবতেও পারেনি যে, এই ছোট্ট নরেন্দ্রনাথ দত্ত একদিন আধ্যাত্মিকতা, জাতীয়তা, হিন্দু ধর্ম এবং ভারতীয় সংস্কৃতির বাহক ও স্বামী বিবেকানন্দ নামে বিশ্বের বুকে পরিচিতি পাবে |

Swami Vivekananda Education:

স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৭১ সালে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে সর্বপ্রথম ভর্তি হন এবং সেখানেই পড়াশোনা করেন যতদিন না পর্যন্ত তিনি ও তাঁর পরিবার ছত্তিসগড়ের রায়পুরে স্থানান্তরিত হন |

রায়পুর থেকে আবার ১৮৭৯ সালে ফিরে আসার পর, প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাশ করে তিনি ভর্তি হন কোলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে | আর সেইবছর কলেজের সব পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে একমাত্র ছাত্র হিসাবে তিনি নজির গড়ে দেন |

এরপর প্রেসিডেন্সি থেকে তিনি পড়াশোনা শেষ করে তিনি কোলকাতার আরেকটি সুপ্রতিষ্ঠিত কলেজ স্কটিশ চার্চে ভর্তি হন | এখানে তিনি পাশ্চাত্য যুক্তিবিদ্যা, পাশ্চাত্য দর্শন ও ইউরোপীয় ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং ১৮৮৪ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে সক্ষম হন |

কলেজে পড়াশোনা করার পাশাপাশি, তিনি প্রচুর অন্যান্য বইও পড়তেন |  ধর্ম,দর্শন, ইতিহাস, শিল্পকলা,সমাজবিজ্ঞান ও সাহিত্য সম্পর্কীয় বিষয় নিয়ে তাঁর আগ্রহ ছিলো ভীষন | এছাড়াও তিনি খুব অল্প বয়সেই  বেদ,উপনিষদ,রামায়ণ ও মহাভারত প্রভৃতি পড়েও ফেলেন |

এত পড়াশোনার মাঝেও তিনি কিন্তু তাঁর শরীর চর্চা করতে কখনোই ভুলতেন না | প্রত্যেকদিন মনে করে ব্যায়াম, যোগাসন ও খেলাধুলাতে তিনি সময় ব্যয় অবশ্যই করতেন |

Brahmo Samaj and  Vivekananda:

রাজা রামমোহন রায়ের বেদান্ত বিষয়ক গ্রন্থ পড়ে স্বামীজি ব্রাহ্মসমাজের প্রতি ভীষনভাবে আকৃষ্ট হন । শোনা যায়, কেশবচন্দ্র সেন সেই সংঘের একজন শক্তিশালী নেতা ছিলেন, যাঁর বক্তৃতা শুনতে যুবক নরেন্দ্রনাথ বেশ ভালোবাসতো এবং সেই সংগঠিত সভাসমিতিতে তিনি নাকি মাঝে মাঝে অনেক ভক্তিমূলক সংগীতও পরিবেশন করতেন যা সেখারকার সদস্যদের বেশ অনুপ্রাণিতও করতো |

আরো পড়ুন: স্বামী বিবেকানন্দের অমূল্য বাণী 

এরপর ধীরে ধীরে তিনি নিরাকার ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং মূর্তি পূজার সমালোচকে পরিণত হন । আর দৃঢ়ভাবে উপনিষদ ও বেদান্তের যৌক্তিকীকরণ, একেশ্বরবাদী ধর্মতত্ত্ব এইসব বিষয়; সমাজের মানুষদের মাঝে তুলে ধরতে শুরু করেন |

Ramakrishna Paramahamsa and Swami Vivekananda:

স্বামী বিবেকানন্দের জীবনে এমন এক সময় আসে যখন তিনি সাংসারিক জীবন এবং সন্ন্যাস জীবনের মধ্যে যে কোনো একটা দিক বেছে নেওয়ার ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে পরেন |

বাবার মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পড়াশুনা ছেড়ে দিতে হয় । কারণ পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্বভার তখন তাঁর কাঁধে এসে পরে | তিনি তাঁর পরিবারের আর্থিক সহায়তার জন্য মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন কিছুদিনের জন্য ।

কিন্তু সেখানে তিনি বেশিদিন পড়াতে পারেননি | এর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ তাঁর আধ্যাত্মিক জীবনের প্রতি আকর্ষণ | শোনা যায়, তিনি নাকি একদিন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, “আপনি ঈশ্বরকে দেখেছেন?” 

সেই কথা শুনে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বামীজিকে রামকৃষ্ণ পরমহংসের সাথে সাক্ষাৎ করার পরামর্শ দেন | কারণ তাঁর মতে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া একমাত্র রামকৃষ্ণ ছাড়া অন্য কারোর পক্ষে সম্ভব ছিলোনা |

অবশেষে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের কথা মতো তিনি রামকৃষ্ণ পরমহংসের সাথে সাক্ষাৎ করেন |

তারপর কি হয়েছিলো, তা হয়তো আমরা প্রত্যেকেই জানি | স্বামীজি এরপর রামকৃষ্ণ পরমহংসের পরম ভক্ত হয়ে যান এবং তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে নিজের জীবনে তাঁর গুরুর আদর্শ ও নীতিগুলোকে সারাজীবন পালন করতে থাকেন |

ধীরে ধীরে স্বামী বিবেকানন্দ ও রামকৃষ্ণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো মজবুত হতে থাকে | স্বামীজি তাঁর গুরুর, একদম শেষদিন পর্যন্ত ভীষন সেবা করেন | ১৮৮৫ সালে যখন রামকৃষ্ণ পরমহংস ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হন, তখন তিনি তাঁর সেবায় দিনরাত অতিবাহিত করেছিলেন |

আরো পড়ুন: রামকৃষ্ণ পরমহংসের অমৃত বাণী

অবশেষে ১৮৮৬ সালে ১৬ই অগাস্ট রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর স্বামীজি সহ তাঁর ১২ জন শিষ্য কোলকাতার নিকটবর্তী বরাহনগর অঞ্চলে রামকৃষ্ণ মঠের  প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানে তাঁরা গুরুর কাছ থেকে শেখা সমস্ত আধ্যাত্মিক সাধনাগুলোর অনুশীলন করতে থাকেন |

Traveler Swami Vivekananda:

তোমাকে জানিয়ে দিই, স্বামী বিবেকানন্দ মাত্র ২৫ বছর বয়সেই গেরুয়া বস্ত্র ধারণ করেছিলেন এবং তারপর তিনি সমগ্র ভারতবর্ষ পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন | ১৮৮৮ সালে তিনি পরিব্রাজকরূপে মঠ ত্যাগ করেন |

জানা যায়, ভ্রমনকালীন সময়ে স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গী ছিল একটা কমণ্ডলু, লাঠি এবং তাঁর প্রিয় দুটো গ্রন্থ – ভগবদ্গীতা ও ইশানুসরণ | পাঁচ বছর ধরে তিনি ভারতের সর্বত্র ভ্রমণ করেন এবং বিভিন্ন ধর্মসম্প্রদায় ও সমাজব্যবস্থার সঙ্গে সুপরিচিত হন |

ভারত ভ্রমনকালে তিনি বিভিন্ন জায়গা, যেমন- বারানসী, আগড়া, বৃন্দাবন, আলওয়ারসহ অনেক স্থানে যান এবং ১৮৯০ সালের জুলাই মাসে স্বামী অখণ্ডানন্দের সঙ্গে তিনি যান নৈনিতাল, আলমোড়া, শ্রীনগর, দেরাদুন, ঋষিকেশ, হরিদ্বার এবং শেষপর্যন্ত হিমালয়েও |

এই সফরকালে তিনি অনেক সময় রাজপ্রাসাদেও রাত কাটান এবং অনেক দরিদ্র মানুষের কুটিরেও রাত কাটান কখনো কখনো | যখন যেখানে মাথা গোঁজার স্থান পেতেন সেখানেই নির্দ্বিধায় চলে যেতেন |

১৮৯২ সালে ২৩শে ডিসেম্বর তিনি ভ্রমন করতে করতে পৌঁছান কন্যাকুমারীতে | সেখানে তিনি তিনদিন ধ্যানবস্থায় ছিলেন | এরপর তিনি কন্যাকুমারী থেকে রওনা হন রাজস্থানের আবু রোডের উদ্দেশ্যে | যেখানে তিনি স্বামী ব্রহ্মানন্দ ও স্বামী তুরীয়ানন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেন |

তিনি তাদের দুজনের কাছে ভারতের দারিদ্রতা ও মানুষের কষ্ট সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করেন | ভারতের এই করুণ অবস্থা তাঁকে ভিতর ভিতর ভীষনভাবে ব্যথিত করে | সেইজন্য তিনি এইসবের থেকে ভারতকে মুক্ত করার জন্য আমেরিকায় আয়োজিত ধর্ম সম্মেলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন |

Swami Vivekananda Chicago Speech:

১৮৮৩ সালের বিশ্ব ধর্ম সম্মেলন সেইবার আমেরিকার শিকাগোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো | সেখানে ভারতের হয়ে স্বামী বিবেকানন্দ অংশগ্রহন করেন |

সম্মেলনের এক জায়গায় যখন প্রত্যেক ধর্মগুরুরা তাদের ধর্মের মহানগ্রন্থ গুলো রেখেছিলো, সেইসময় স্বামীজি ভারতীয় হিন্দু ধর্মকে মানুষের মাঝে বিশ্লেষণ করার জন্য শ্রীমদ ভগবদ্গীতা বার করে সেখানে রাখেন | যা দেখে সেখানে উপস্থিত সমস্ত ধর্মগুরুরা হঠাৎ তাঁকে উপহাস করতে শুরু করেন |

কিন্তু স্বামীজি তাতে বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি, বরং যখন সম্মেলন শুরু হয় এবং তাঁর সেখানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আসে, তখন তিনি এত সুন্দরভাবে ভারতীয় হিন্দুধর্ম ও শাস্ত্রগুলো সম্পর্কে সবার মাঝে বিশ্লেষণ করেন যা দেখে সেখানে উপস্থিত সকল দর্শকেরা মুগ্ধ হয়ে যান এবং আনন্দে হাততালি দিতে শুরু করেন |

তাঁর বক্তৃতায় একদিকে যেমন ছিলো বৈদিক দর্শনের জ্ঞান, তেমনই অন্যদিকে ছিলো শান্তির বার্তাও | তিনি তাঁর বক্তৃতার মাধ্যমে চরমপন্থা ও সাম্প্রদায়িকতার বিষয়েগুলোকে সবার মাঝে তুলে ধরেছিলেন |

তাঁর এই বক্তৃতাই, বিশ্বের বুকে হিন্দুধর্ম ও ভারতবর্ষকে পুণরায় সবার উপরে তুলে ধরতে ভীষনভাবে সাহায্য করেছিলো |

শিকাগোতে দেওয়া স্বামীজির সেই অনবদ্য ভাষন

Ramakrishna Mission Established:

১লা মে ১৮৯৭ সালে বিবেকানন্দ অবশেষে কোলকাতায় আসেন এবং এখানে এসে তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা করেন | এই মিশন তৈরীর পিছনে তাঁর উদেশ্য ছিলো নতুন ভারত নির্মানের | মানুষের সেবার জন্য আধুনিক স্কুল,কলেজ এবং হাসপাতাল নির্মান করাই এর প্রধান কাজ ছিলো |

এরপর ১৮৯৮ সালে স্বামীজি প্রতিষ্ঠা করেন বেলুড় মঠের, যা ভারতীয় জীবন দর্শনের ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা প্রদান করতে সাহায্য করেছিলো | এছাড়াও পরে, স্বামী বিবেকানন্দ আরো দুটো মঠের প্রতিষ্ঠাও করেন ।

Death of Swami Vivekananda:

অবশেষে ৪ই জুলাই ১৯০২ সালে, মাত্র ৩৯ বছর বয়সে স্বামী বিবেকানন্দ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন | তিনি নাকি সেইদিন, ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠেন এবং  বেলুড় মঠ প্রাঙ্গনে তিন ঘন্টা ধরে ধ্যানও করেন | এছাড়াও তিনি স্বামী প্রেমানন্দের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে তাঁর সাথে রামকৃষ্ণ মঠের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গুলো সম্পর্কে আলোচনাও করেন |

এরপর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তিনি তাঁর ঘরে ফেরেন এবং সবাইকে নির্দেশ দেন বিরক্ত না করার | 

এর ঠিক প্রায় দুই ঘন্টা পর অর্থাৎ রাত ৯:১০ মিনিটে ধ্যানরত অবস্থাযই তাঁর মৃত্যু হয় | ডাক্তারদের মতে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল মস্তিস্কের একটা রক্তনালী ফেটে যাওয়ার ফলে কিন্তু তাঁর শিষ্যদের মতে তিনি নাকি স্বেছায় দেহত্যাগ করেন, তাঁর মৃত্যু হয়নি |

আরো পড়ুন: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী

সে যেই কারণই হোক না কেন, তাঁর মতো একজন মহান মানুষকে প্রত্যেক দেশবাসীই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই হারিয়ে ফেলে | তিনি সমাজের উন্নতি সাধনের জন্য যা করে গেছিলেন, সেটা আমরা কোনোদিন ভুলতে পারবোনা |

যুব সমাজ তথা সাধারণ দেশবাসীর কাছে তিনি হলেন ভগবান তুল্য মানুষ | তাঁর এইরকম অকাল মৃত্যুতে আজও দেশবাসী কোনো না কোনোভাবে ভীতর ভীতর গভীর ভাবে শোকাহত |

অবশেষে এই মহান মানুষটির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, বেলুড়ে গঙ্গা নদীর তীরে সম্পন্ন করা হয় | যেখানে তাঁর মৃতদেহকে দাহ করা হয়, তার ঠিক বিপরীত পাশে ষোলো বছর আগে রামকৃষ্ণ দেবের মৃতদেহকে দাহ করা হয় |

আশা করি তুমি “Swami Vivekananda Biography in Bengali” পড়ে নিশ্চই অনেক কিছু সুন্দর তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছো | পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটু Comment করে তোমার মতামত আমায় জানিও | তোমার মূল্যবান মতামত আমাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাতে  ভীষনভাবে সাহায্য করে |

শেয়ার করুন: on Twitter on Facebook on Google+

Ajob Rahasya – A Magazine For Super Positive People

September 3, 2020 by maximios • Quotes

শরৎচন্দ্রের জীবনীSarat Chandra Chattopadhyay Biography in Bengali নাম শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় / Sarat Chandra…

Continue reading

ওশো রাজনিজসের উক্তিQuotes of Osho on Life Inspirational Quote #1 “কেবল সেইসব মানুষই যারা কিছু হওয়ার জন্য…

Continue reading

সন্দীপ মহেশ্বরীর উক্তিQuotes of Sandeep Maheshwari Inspirational Quote #1 “জড় জিনিসগুলোকে নিয়ে তুমি যত ভাব্বে…

Continue reading

নজরুল ইসলামের জীবনীKazi Nazrul Islam Biography নাম কাজী নজরুল ইসলাম/ Kazi Nazrul Islam জন্ম ২৪শে মে ১৮৯৯…

Continue reading

গৌতম বুদ্ধের বাণী50 Buddha Motivational Quotes Inspirational Quotes #1 “প্রত্যেকটা দিনের গুরত্বকে বুঝুন…

Continue reading

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনীRabindranath Tagore Biography নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর/Rabindranath Tagore জন্ম ৭ই মে…

Continue reading

নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তাBengali Happy New Year Quotes Inspirational Quote #1 “নিশি অবসান প্রায় ঐ পুরাতন বর্ষ হয়…

Continue reading

সারদা দেবীর বাণীSarada Devi Quotes in Bengali Inspirational Quote #1 “আমি সত্যেরও মা, অসত্যেরও মা” – Sarada Devi Inspirational Quote…

Continue reading

শচীন তেন্ডুলকারের জীবনীSachin Tendulkar Life Story নাম শচীন তেন্ডুলকার/Sachin Ramesh Tendulkar জন্ম ২৪শে…

Continue reading

শাহরুখ খানের জীবনীShahrukh Khan Life History নাম শাহরুখ খান/Shahrukh Khan জন্ম ২রা নভেম্বর ১৯৬৫ (নয়া…

Continue reading

Email Protection | Cloudflare

August 21, 2020 by maximios • Quotes

The website from which you got to this page is protected by Cloudflare. Email addresses on that page have been hidden in order to keep them from being accessed by malicious bots. You must enable Javascript in your browser in order to decode the e-mail address.

If you have a website and are interested in protecting it in a similar way, you can sign up for Cloudflare.

Rabindranath Tagore Biography in Bengali | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী

July 18, 2020 by maximios • Quotes

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী
Rabindranath Tagore Biography

নাম

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর/Rabindranath Tagore

জন্ম

৭ই মে ১৮৬১, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, কোলকাতা

অভিভাবক

দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (বাবা)
সারদাসুন্দরী দেবী (মা)

ছদ্দনাম

ভানুসিংহ

দাম্পত্যসঙ্গী

মৃণালিনী দেবী

পেশা

কবি, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, গল্পকার

উল্লেখযোগ্য রচনাবলী

গীতাঞ্জলী, রবীন্দ্র রচনাবলী, গোরা, আমার সোনার বাংলা, ঘরে বাইরে প্রভৃতি

উল্লেখযোগ্য পুরস্কার

নোবেল পুরস্কার (১৯১৩)

মৃত্যু

৭ই আগস্ট ১৯৪১

মৃত্যুস্থান

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, কোলকাতা

বাংলা সাহিত্য জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে যদি কেউ থেকে থাকেন তাহলে সেটা অবশ্যই আমাদের সকলের প্রিয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | তাঁর লেখা অসাধারণ সব কবিতা ও গান, আজও প্রত্যেকটা বাঙালীর সমানভাবে মন কাঁড়ে | তিনি শুধু একজন শ্রেষ্ঠ গল্পকারই ছিলেন না, সেইসাথে ছিলেন একজন  ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিকও |

Early Life of  Rabindranath Tagore:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম হয় ৭ই মে ১৮৬১ সালে, পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা শহরে অবস্থিত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে | তাঁর বাবার নাম ছিলো মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি কিনা ব্রাহ্মসমাজের একজন ধর্মগুরু ছিলেন এবং তাঁর মায়ের ছিলো নাম সারদাসুন্দরী দেবী |

তুমি হয়তো জেনে এটা অবাক হবে যে, রবীন্দ্রনাথ কিন্তু তাঁর বাবা মায়ের ১৪তম সন্তান ছিলেন | তাঁর সকল ভাই ও বোনদের নাম ছিলো যথাক্রমে- দ্বিজেন্দ্রনাথ, গণেন্দ্রনাথ, সত্যেন্দ্রনাথ, হেমেন্দ্রনাথ, বীরেন্দ্র, সৌদামিনি, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, সুকুমারী, পুনেন্দ্র, শরৎকুমারী, বার্ণকুমারী, সোমেন্দ্র, বুধেন্দ্র ও গগেন্দ্রনাথ|

এরপর ১৮৭৫ সালে যখন রবীন্দ্রনাথের মাত্র চোদ্দ বছর বয়স, তখন তাঁর মায়ের অবশেষে মৃত্যু ঘটে | স্ত্রীয়ের মৃত্যুর পর দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরও বেশি জোড়াসাঁকোর বাড়িতে থাকতেন না | দেশভ্রমণের নেশায়, বছরের অধিকাংশ সময়ই কলকাতার বাইরে তিনি অতিবাহিত করতেন |

এরফলেই ছোট্ট রবীন্দ্রনাথের শৈশব জীবন, ভৃত্যদের অনুশাসনে কেটেছিলো |

Education of Rabindranath Tagore:

ছোটবেলায় রবীন্দ্রনাথ কোলকাতার বিভিন্ন স্কুলে কিছুদিনের জন্য পড়াশোনা করেন | যেই স্কুলগুলোর নাম ছিলো যথাক্রমে- ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, নর্ম্যাল স্কুল, বেঙ্গল অ্যাকাডেমি এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট |

কিন্তু এতগুলো নামী স্কুলে পড়ার পরেও, তিনি কোনো স্কুলে বেশিদিন টিকতে পারেননি | এর পিছনে অবশ্য প্রধান কারণ ছিলো তাঁর স্কুল শিক্ষার প্রতি অনীহা | জানা যায়, স্কুলের চার দেওয়ালের বদ্ধ পরিবেশে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর এই রীতি তাঁকে মোটেই পড়াশোনা শেখার প্রতি আকৃষ্ট করতো না |

Real Photo of Rabindranath Tagore (Credit- Wikipedia)

এইজন্যই পরে, বাড়ির খোলা পরিবেশে পড়ানোর জন্য গৃহশিক্ষক রেখে তাঁর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো |

তাঁর এই অদ্ভুত আচরণের উদ্ভব হয়, তাঁর প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা থেকেই | শোনা যায়, ছেলেবেলায় জোড়াসাঁকোর বাড়িতে অথবা বোলপুর ও পানিহাটির বাগানবাড়িতেও প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে তিনি বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করতেন | সেইসময় প্রকৃতিই ছিলো যেন তাঁর জীবনের প্রধান আকর্ষণের বিষয় |

আরো পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তিসমূহ

এরপর ১৮৭৮ সালে ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে যান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | সেখানে ব্রাইটনের একটি পাবলিক স্কুলেও ভর্তি হন তিনি | তারপর ১৮৭৯ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন কিন্তু সাহিত্যচর্চার প্রতি আকর্ষণের কারণে তিনি সেই পড়াশোনা আর শেষ করতে পারেননি |

Marriage of Rabindranath Tagore:

ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে আশার পর, অবশেষে ১৮৮৩ সালে ৯ই ডিসেম্বর তারিখে রবীন্দ্রনাথের বিয়ে হয় বেণীমাধব রায়চৌধুরী নামে ঠাকুরবাড়ির এক অধস্তন কর্মচারীর কন্যা ভবতারিণীর সঙ্গে | বিয়ের সময় ভবতারিণীর পুণরায় নামকরণ করা হয় এবং তাঁর নাম পাল্টে রাখা হয় মৃণালিনী দেবী |

Rabindranath With Mrinalini Devi (Credit- Wikipedia)

পরবর্তীকালে, মৃণালিনী দেবী ও রবীন্দ্রনাথের মোট পাঁচ সন্তান হয় | তাঁদের নাম যথাক্রমে ছিলো- মাধুরীলতা (১৮৮৬–১৯১৮), রথীন্দ্রনাথ (১৮৮৮–১৯৬১),  রেণুকা (১৮৯১–১৯০৩),  মীরা (১৮৯৪–১৯৬৯) এবং শমীন্দ্রনাথ (১৮৯৬–১৯০৭) |

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এঁদের মধ্যে অতি অল্প বয়সেই রেণুকা ও শমীন্দ্রনাথ মারা যায় |

Career of Rabindranath Tagore:

ভারতী পত্রিকায় ১৮৭৭ সালে, মাত্র ১৬ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ রচনা প্রকাশ করেন | সেগুলো ছিলো ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী, মেঘনাদবধ কাব্যের সমালোচনা আর ভিখারিণী ও করুণা নামে দুটো সুন্দর ছোটগল্প | এগুলোর মধ্যে ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পায় |

এরপর ১৮৭৮ সালে প্রকাশিত হয় রবীন্দ্রনাথের প্রথম কাব্যগ্রন্থ “কবিকাহিনী” | এছাড়াও পরে তিনি রচনা করেছিলেন “সন্ধ্যাসংগীত” নামক আরেকটি কাব্যগ্রন্থ । “নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ” নামে লেখা তাঁর সেই বিখ্যাত কবিতা এই কাব্যগ্রন্থেরই অন্তর্গত ছিলো ।

এরপর একে একে “সন্ধ্যাসংগীত” কাব্যগ্রন্থ রচনার পর তিনি  প্রভাতসংগীত,  মানসী (১৮৯০),  সোনার তরী (১৮৯৪),  চিত্রা (১৮৯৬), চৈতালি (১৮৯৬), কল্পনা (১৯০০) ও ক্ষণিকা (১৯০০), নৈবেদ্য (১৯০১),  খেয়া (১৯০৬), গীতাঞ্জলী (১৯১০), গীতিমাল্য (১৯১৪) ও গীতালি (১৯১৪), বলাকা (১৯১৬), শ্যামলী (১৯৩৬) প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন |

রবীন্দ্রনাথের সর্বাপেক্ষা সুপরিচিত গ্রন্থ হল গীতাঞ্জলী (Song Offerings), যেটার জন্য তিনি সারা বিশ্বে বিশাল জনপ্রিয়তা পান | আর এই কাব্যগ্রন্থের জন্যই তিনি ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কারও অর্জন করেছিলেন ।

তিনি ছিলেন এমন একজন প্রতিভাবান সাহিত্যিক যাঁর হাতেই বাংলা প্রবন্ধ, রচনা, কবিতা, ছোটগল্পের বিপুল প্রসার ঘটে | তাঁর এইসব সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তৎকালীন সমাজ, রাষ্ট্রনীতি, ধর্ম, সাহিত্যতত্ত্ব, ইতিহাস, ভাষাতত্ত্ব, ছন্দ, সংগীত ইত্যাদি নানা বিষয় সম্পর্কে স্পষ্টভাবে ধারণা পাওয়া যায় |

তিনি কিন্তু শুধু কবিতা, গান, নাটক, ছোটগল্প কিংবা উপন্যাস লেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না | বিভিন্ন জীবনীমূলক ও ভ্রমণ কাহিণী লেখাতেও তিনি ছিলেন সমানভাবে পটু | তাঁর বিখ্যাত কিছু আত্মকথামূলক গ্রন্থ হলো – জীবনস্মৃতি (১৯১২), ছেলেবেলা (১৯৪০) ও আত্মপরিচয় (১৯৪৩)|

Establishment of Shantiniketan & Vishva Bharti:

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক বছর আগে বোলপুরের শান্তিনিকেতনে, এক বিশাল জমি কেনেন | সেখানে তিনি ১৮৮৮ সালে একটা আশ্রম ও ১৮৯১ সালে একটা ব্রহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন |

বাবার সেই কেনা জমিতে রবীন্দ্রনাথ একটা শিক্ষাকেন্দ্র তৈরী করতে চেয়েছিলেন | তাই প্রথমে তিনি সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন “পাঠ্য ভবন” নামে একটা স্কুল, যেটা বাকি সব স্কুলের থেকে বেশ আলাদা ছিলো | কারণ সেই স্কুল ছিলো সম্পূর্ণ খোলা আকাশের নীচে একটা গাছের তলায় |

Mahatma Gandhi With Kaviguru

পরে ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি সেই স্কুলকে আরো বিস্তৃত করার উদ্দেশ্যে সেটাকে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করেন | যেটার পরবর্তীকালে নাম রাখেন তিনি “বিশ্বভারতী” যা ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় |

সমাজের পিছিয়ে পরা মানুষদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে তিনি আবার ১৯২৪ সালে আরেকটি শিক্ষাকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা করেন যেটা ছিলো “শিক্ষা সত্র” | তিনি এই প্রতিষ্ঠান মাত্র ৭ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে শুরু করেছিলেন |

World Tour of  Rabindranath Tagore:

জীবনাবস্থায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট ১২বার বিদেশ ভ্রমণ করেন | তিনি মোট পাঁচটি মহাদেশের ত্রিশটিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে | ১৯২০ থেকে ১৯২১ সাল নাগাদ আবার ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান তিনি । ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ যান চীন সফরে, তারপর সেখান থেকে জাপানে গিয়ে সেখানে জাতীয়তাবাদ বিরোধী বক্তৃতা দেন |

আরো পড়ুন: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী

সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ সহ তাঁর চার সঙ্গীকে নিয়ে  দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে গেছিলেন ১৯২৭ সালে | তারপর তিনি একে একে ভ্রমণ করেন সুইজারল্যান্ড,  সোভিয়েত রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, ইরাক ও পারস্য প্রভৃতি দেশে | ১৯৩৪ সালে শ্রীলঙ্কা যাত্রাই ছিলো কবিগুরুর শেষে বিদেশ যাত্রা |

Interesting Facts About Rabindranath Tagore:

  • মাত্র আট বছর বয়স থেকেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন |
  • তিনি চিরাচরিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে একদম তুচ্ছ মনে করতেন এবং সেই চিরাচরিত শিক্ষার অধীনে থেকে পড়তে ভালোবাসতেন না |
  • তিনি ভারতীয় সাহিত্য ও কলায় বিপ্লবের উদ্দেশ্যে, বাংলায় নবজাগরণ আন্দোলন শুরু করেছিলেন |
  • তাঁর সাথে পৃথিবী বিখ্যাত জার্মান বৈজ্ঞানিক আলবার্ট আইনস্টাইনের গভীর সম্পর্ক ছিলো এবং দুজনেই সেইসময় নোবেল পুরস্কার জয়ের পর একে অপরের প্রশংসাও করেন |
  • বিখ্যাত সিনেমা পরিচালক সত্যজিৎ রায়, রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যিক কর্মকান্ডে বিশেষভাবে প্রভাবিত হন | “পথের পাঁচালী” সিনেমায় পরিচিত সেই ট্রেনের দৃশ্য, আসলে কবিগুরু রচিত “চোখের বালিতে” বর্ণিত একটা ঘটনার থেকে অনুপ্রাণিত ছিলো |
  • রবীন্দ্রনাথ একজন মহান সুরকারও ছিলেন |  তিনি প্রায় দুই হাজারেরও বেশি গান নিজে রচনা করেছিলেন |

Awards and Achievements of Rabindranath:

  • ১৯৪০ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে শান্তিনিকেতনে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে “ডক্টরেট অব লিটারেচার” সন্মানে ভূষিত করে |
  • বিদেশে তাঁর রচিত গীতাঞ্জলী কাব্য, বিশেষ জনপ্রিয়তা পায় | সেই সুবাদে তাঁকে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দিয়ে সন্মানিত করা হয় |
  • ১৯১৫ সালে তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক নাইট উপাধি পান | কিন্তু ১৯১৯ সালে ঘটে যাওয়া জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের পর তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন |
  • ১৯৩০ সালে রবীন্দ্রনাথের আঁকা একটা ছবি, প্যারিস ও লন্ডনে প্রদর্শিত হয় |
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাপানের ডার্টিংটন হল স্কুলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন |
  • ৭ই মে ১৯৬১ সালে, ভারতীয় ডাকবিভাগ সম্মান জ্ঞাপনের উদেশ্যে; তাঁর ছবি দেওয়া একটা ডাক টিকিট প্রকাশ করে |

Death of Rabindranath Tagore:

জীবনের শেষ কিছু বছর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ধারাবাহিক ভাবে শারীরিক অসুস্থতার শিকার হন | রোগ যেন তাঁকে কিছুতেই ছাড়তেই চাইছিলো না | দুবার তো তিনি এমন অসুস্থ হন, যারজন্য তাঁকে বহুদিন বিছানায় শয্যাশায়ী অবস্থায় পরে থাকতে হয় |

জানা যায় ১৯৩৭ সালে কবি একবার অচৈতন্য হয়ে গিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থার শিকার হন | যদিও তিনি সেইসময় সেবার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ঠিকই কিন্তু ১৯৪০ সালে আবার গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পর তিনি আর সেরে উঠতে পারেননি |

আরো পড়ুন: সুকুমার রায়ের জীবনী

অবশেষে দীর্ঘ রোগভোগের পর ১৯৪১ সালের ৭ই আগস্ট তারিখে, জোড়াসাঁকোর বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি | মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিলো প্রায় ৮০ বছর |

আশা করি তুমি “Rabindranath Tagore Biography in Bengali” পড়ে নিশ্চই অনেক কিছু সুন্দর তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছো | পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটু Comment করে তোমার মতামত আমায় জানিও | তোমার মূল্যবান মতামত আমাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাতে  ভীষনভাবে সাহায্য করে |

শেয়ার করুন: on Twitter on Facebook on Google+

«‹ 5 6 7 8

Recent Posts

  • Ajob Rahasya – A Magazine For Super Positive People
  • 30 Best Sheikh Hasina Quotes In Bengali | শেখ হাসিনার উক্তি
  • সুকুমার রায়ের জীবনী | Sukumar Roy Biography in Bengali
  • ক্যারিমিনাটির সংক্ষিপ্ত জীবনী | Biography of CarryMinati in Bengali
  • জর্জ বার্নার্ড শয়ের উক্তি | Bangla Quotes of George Bernard Shaw

Recent Comments

No comments to show.

Archives

  • March 2023
  • November 2022
  • September 2022
  • August 2022
  • May 2022
  • April 2022
  • March 2022
  • February 2022
  • January 2022
  • November 2021
  • October 2021
  • September 2021
  • May 2021
  • February 2021
  • January 2021
  • December 2020
  • November 2020
  • October 2020
  • September 2020
  • August 2020
  • July 2020

Categories

  • Quotes
© reebokcrossfitone.com 2025
Powered by WordPress • Themify WordPress Themes