ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে অটল বিহারী বাজপেয়ী হলেন এমন এক ব্যক্তিত্ব, যাঁর অবদান ভারতের প্রত্যেকটি নাগরীকের ভোলার নয় |
তাঁর জন্ম হয় ২৫শে ডিসেম্বর ১৯২৪ সালে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের গোয়ালিয়র শহরে | তাঁর বাবার নাম ছিল কৃষ্ণবিহারী বাজপেয়ী এবং মায়ের নাম ছিল কৃষ্ণা দেবী |
তাঁর বাবা কৃষ্ণবিহারী ছিলেন নিজের গ্রামের একসময়কার মহান কবি আর সেই সাথে ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক |
অটল বিহারীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় গোয়ালিয়র জেলার একটি ছোট্ট স্কুল সরস্বতী শিশু মন্দির থেকে এবং তারপর তিনি সেখানে পড়াশোনা শেষ করে ভর্তি হন গোয়ালিয়রের লক্ষীবাঈ কলেজ |
তিনি সেখানে হিন্দি, ইংরাজী এবং সংস্কৃত বিষয়ের উপর পড়াশোনা করে নিজের Graduation সম্পূর্ণ করেন | তারপর কানপুরের দয়ানন্দ এংলো বৈদিক মহাবিদ্যালয় থেকে তিনি পলিটিক্যাল সায়েন্সে M.A সম্পূর্ণ করেন |
গোয়ালিয়রের আর্য কুমার সভা থেকে তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন | তিনি সেই সময় আর্য সমাজের যুব শক্তি হিসেবে বিবেচিত হন এবং ১৯৪৪ সালে তিনি সেখানকার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহন করেন |
১৯৩৯ সালে একজন স্বেচ্ছাসেবকের মতো তিনি জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী ইউনিয়নে (আরএসএস) যোগ দেন এবং সেখানে বাবাসাহেব আপ্তেকে দেখে প্রভাবিত হয়ে তিনি ১৯৪০-১৯৪৪ সাল পর্যন্ত আরএসএস ট্রেনিং ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নেন | অবশেষে ১৯৪৭ সালে তিনি আরএসএসের একজন স্থায়ী কর্মী হয়ে ওঠেন ।
ভারতের বিভাজন যখন প্রায় নিশ্চিত, সেইসময় তিনি তাঁর Law এর পড়াশোনা মাঝখানেই ছেড়ে দেন এবং তাঁকে একজন প্রচারক রূপে উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় |
সেখানে তিনি দীনদয়াল উপাধ্যায়ের সাথে মিলে রাষ্ট্রধর্ম (হিন্দি মাসিক), পঞ্চজন্য (হিন্দি সাপ্তাহিক), দৈনিক স্বদেশ ও বীর অর্জুন নামক ইত্যাদি সব খবরের কাগজের হয়ে কাজ করতে থাকেন |
তুমি কি জানো? অটল বিহারী বাজপেয়ী কোনোদিন বিয়ে করেননি, সারাজীবনই তিনি অবিবাহিতই ছিলেন | কিন্তু তাঁর নমিতা নামে একটি মেয়ে ছিল যাকে তিনি দত্তক নিয়ে ছিলেন |
নমিতা, ভারতীয় সাংস্কৃতিক নৃত্য এবং গানকে বেশ পছন্দ করতেন এবং সেই সাথে তিনি প্রকৃতিপ্রেমীও ছিলেন বলে জানা যায় |
রাজনৈতিক জীবন – Atal Bihari Vajpayee Political Career
আমদের দেশের পূর্ব প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী স্বাধীন ভারতীয় রাজনীতির এমন এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যাঁর রাজনৈতিক অবদান কোনোদিন ভোলার নয় |
একসময় ছিল যখন বাজপেয়ীর অমূল্য বক্তৃতা, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুও একদম মুগ্ধ হয়ে শুনতেন |
তোমায় এটাও জানিয়েদি যে, তিনি একসময় ভারতের বিদেশ মন্ত্রী হিসাবেও নির্বাচিত হন |
যখন বিজেপির অস্তিত্ব ভারতীয় সংসদ থেকে প্রায় মুছে যাওয়ার জোগার, তখন বাজপেয়ীর নেতৃত্বেই বিজেপি আবার রাজিনীতিতে নতুন জীবন পায় এবং দেশে তাঁর দল ক্ষমতাও আসে |
১৯৬৮ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি জনসংঘের সভাপতি ছিলেন এবং মরারজি দেসাইয়ের মন্ত্রিসভায়, তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী হিসাবেও নিযুক্ত ছিলেন একসময় |
বিরোধী দলের অন্য সহকর্মীদের মতোই তাকেও জরুরী অবস্থার সময় জেলে পাঠানো হয়েছিল।
১৯৭৭ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে তাঁকে বিদেশমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত করা হয় ।
এই সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র অধিবেশনে গিয়ে হিন্দী ভাষায় নিজের বক্তব্য পেশ করেন যা তিনি তাঁর জীবনের একটি সেরা মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন ।
১৯৮০ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিজেপির সভাপতি ছিলেন এবং এই সময়ে তিনি বিজেপি পার্লামেন্টারি পার্টির নেতাও ছিলেন।
অটল বিহারী বাজপেয়ী এখনও পর্যন্ত নয়বার লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন |
১৯৮৪ সালে তাঁকে গোয়ালিয় জেলার নির্বাচনে কংগ্রেসের একজন বিখ্যাত নেতা মাধবরাও সিন্ধিয়ার কাছে অনেক ভোট হারতে হয় | তিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ এবং ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার একজন সদস্য ছিলেন।
Read More: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী
১৯৬৬ সালে ভারতীয় জনসাধারণ, রাজিনীতিতে একটি পরিবর্তনের আশায় ছিল, তাই বেশিরভাগ মানুষ অবশেষে তখন বিজেপিকে বিপুল ভোটে জয়ী করে আনলো |সেইসাথে প্রথমবারের জন্য অটল বিহারী বাজপেয়ীও ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন |
কিন্তু এই প্রধানমন্ত্রীত্ব তাঁর বেশিদিন কপালে ছিলোনা | মাত্র ১৩ দিনের মাথায় সব কিছু শেষ হয়ে যায় |
কিন্তু এইসবের পরেও বাজপেয়ীর মনোবল একদমই ভাঙ্গেনি | তিনি আবার ১৯৮৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর পার্টির বাকি সহকর্মীদের সাথে একজোট হয়ে, লোকসভায় তাঁর পার্টির সর্বাধিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অবশেষে প্রমান করেন এবং আবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠেন |
অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময়ে, ভারত একটি পারমাণবিক শক্তি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হয়ে ওঠে | তিনি পারস্পরিক বাণিজ্য ও ভ্রাতৃত্বকে উন্নীত করার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের কাশ্মীর সমস্যা সমাধান করার অনেক চেষ্টা করেছিলেন ।
কিন্তু ১৩ মাস ব্যাপী মহান কর্মকান্ডের পর, তাঁর সরকার রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে মাত্র এক ভোটে হেরে যায় |
এরপর তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন |
তারপর, ১৯৯৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি, কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের নৃসংশ আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার ব্যবস্থা করেন এবং অবশেষে কার্গিলের যুদ্ধে ভারত জয়ের মুখ দেখে |
যুদ্ধ শেষে কিছুদিন পরেই,পুনরায় নির্বাচন হয় এবং জনগণের সমর্থনে তাঁর সরকার আবার পুন:গঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সেইসময় তিনি তাঁর ক্ষমতার কিছু বিশেষ পরিচয় দেন সকলের মাঝে।
Important work of Atal Bihari Vajpayee
- ১৯৯৮ সালের ১১ই ও ১৩ই মে, পোখরানে পাঁচটি পারমাণু বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অটল বিহারী বাজপেয়ী ভারতকে পারমাণবিক শক্তি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন |·
- ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯ সালে, পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তিনি সদা-ই-সারহাদ নামে দিল্লী থেকে লাহৌর পর্যন্ত বাস ব্যবস্থা চালু করেন |
- স্বর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্প
- কাবেরী জল বিরোধের নিষ্পত্তি করেন, যেটা কিনা 100 বছরেরও বেশি সময়কার বিরোধ ছিল |
- কাঠামোগত সৌধের জন্য বড় টাস্ক ফোর্স, বৈদুতিক উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ রেগুলেটরি কমিশন, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের জন্য তথ্য ও প্রযুক্তি কার্যসংস্থার গঠন ইত্যাদি তিনি করেন ।
- দেশের সব বিমানবন্দর এবং জাতীয় সড়কের বিকাশ ও নতুন টেলিকম নীতি চালু করার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
- আর্থিক উপদেষ্টা কমিটি, বাণিজ্য ও শিল্প কমিটি, জাতীয় নিরাপত্তা কমিটিও গঠন করেছিলেন, যারফলে কাজ খুব দ্রুত হতে থাকে দেশে |
- urban ceiling act কে সমাপ্ত করে আবাস নির্মাণকে উৎসাহ দেন |
- তিনি বীমা যোজনারও সূত্রপাত করেন যার ফলে গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এবং বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা (NRI) ব্যাপক উপকৃত হয় |
অটল বিহারীর এই সরকার সফল ভাবে তার মেয়াদ শেষ করে এবং এর মাধ্যমে তিনি দেশে জোটের রাজনীতিকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছিলেন | ওই পাঁচ বছরে, এনডিএ সরকার দরিদ্র, কৃষক এবং যুবকদের জন্য অনেক সুন্দর প্রকল্পের বাস্তবায়নও করেছিল |
তাঁর সরকার, ভারতের চার দিকে জাতীয় সড়কের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করার জন্য স্বর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্পটি শুরু করে|
যারফলে দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই ও মুম্বাইয়কে জাতীয় সড়কের মাধ্যমে যুক্ত করা হয় | এরফলে ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থারও অনেক উন্নতি সাধন হয় |
অবিরাম অসুখের কারণে এরপর Atal Bihari Vajpayee রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অটলজী ভারতীয় রাজনীতিকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে চলে গেছিলেন, যা সবসময় মনে রাখার মত |
Read More:- ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর জীবনী
দেশ ও বিদেশে তাঁকে অনেক পুরস্কার ও সন্মানেও ভূষিত করা হয়েছিল| ২৫শে ডিসেম্বর ২০১৪ সালে, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে বাজপেয়ীজীকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান “ভারত রত্ন” হিসাবে ভূষিত ঘোষণা করা হয় ।
তাঁকে সম্মান জানাতে, ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী নিজেই তাঁর বাড়ি ২৭ শে মার্চ ২০১৫ সালে গেছিলেন পুরস্কারটি দেওয়ার জন্য । তাঁর জন্মদিন ২৫শে ডিসেম্বরকে “good governance day” হিসাবে উদযাপন করা হয় সারা ভারতে।
Atal Bihari Vajpayee Awards
- ১৯৯২ সাল: পদ্মভূষণ
- ১৯৯৩ সাল: ডি.লিট (সাহিত্যে ডক্টরেট), কানপুর বিশ্ববিদ্যালয়
- ১৯৯৪ সাল: লোকমান্য তিলক পুরস্কার,শ্রেষ্ঠ সংসদ হিসাবে পুরস্কার,ভারতরত্ন পন্ডিত গোবিন্দ বল্লভ পন্ত পুরস্কার
- ২০১৫ সাল: ভারত রত্ন, মুক্তিযুদ্ধ পুরষ্কার (বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সম্মননা)
অটল বিহারী বাজপেয়ীর জীবনাবসান – Atal Bihari Vajpayee Death
অটল বিহারী বাজপেয়ী তাঁর শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন ১৬ই অগাস্ট ২০১৮ সালে, All India Institute of Medical Sciences (AIIMS) হাসপাতালে বিকেল ৫:০৫ মিনিটে | মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল প্রায় ৯৩ বছর | | তাঁর মৃত্যুতে গোটা ভারতবর্ষের মানুষ আজ গভীর ভাবে শোকাহত |
Hope you find this post about “Biography of Atal Bihari in Bengali” useful and inspiring. if you like this Information About Atal Bihari Vajpayee then please share on Facebook & Whatsapp. And If You Want to Share Your Own Motivational Poems & Travel Stories, Then Please Check Out Here.
শেয়ার করুন: on Twitter on Facebook on Google+
অটল বিহারী বাজপেয়ীর জীবনী | Atal Bihari Vajpayee Biography
November 5, 2022 by maximios • Quotes
ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে অটল বিহারী বাজপেয়ী হলেন এমন এক ব্যক্তিত্ব, যাঁর অবদান ভারতের প্রত্যেকটি নাগরীকের ভোলার নয় |
তাঁর জন্ম হয় ২৫শে ডিসেম্বর ১৯২৪ সালে ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের গোয়ালিয়র শহরে | তাঁর বাবার নাম ছিল কৃষ্ণবিহারী বাজপেয়ী এবং মায়ের নাম ছিল কৃষ্ণা দেবী |
তাঁর বাবা কৃষ্ণবিহারী ছিলেন নিজের গ্রামের একসময়কার মহান কবি আর সেই সাথে ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক |
অটল বিহারীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় গোয়ালিয়র জেলার একটি ছোট্ট স্কুল সরস্বতী শিশু মন্দির থেকে এবং তারপর তিনি সেখানে পড়াশোনা শেষ করে ভর্তি হন গোয়ালিয়রের লক্ষীবাঈ কলেজ |
তিনি সেখানে হিন্দি, ইংরাজী এবং সংস্কৃত বিষয়ের উপর পড়াশোনা করে নিজের Graduation সম্পূর্ণ করেন | তারপর কানপুরের দয়ানন্দ এংলো বৈদিক মহাবিদ্যালয় থেকে তিনি পলিটিক্যাল সায়েন্সে M.A সম্পূর্ণ করেন |
গোয়ালিয়রের আর্য কুমার সভা থেকে তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন | তিনি সেই সময় আর্য সমাজের যুব শক্তি হিসেবে বিবেচিত হন এবং ১৯৪৪ সালে তিনি সেখানকার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহন করেন |
১৯৩৯ সালে একজন স্বেচ্ছাসেবকের মতো তিনি জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী ইউনিয়নে (আরএসএস) যোগ দেন এবং সেখানে বাবাসাহেব আপ্তেকে দেখে প্রভাবিত হয়ে তিনি ১৯৪০-১৯৪৪ সাল পর্যন্ত আরএসএস ট্রেনিং ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নেন | অবশেষে ১৯৪৭ সালে তিনি আরএসএসের একজন স্থায়ী কর্মী হয়ে ওঠেন ।
ভারতের বিভাজন যখন প্রায় নিশ্চিত, সেইসময় তিনি তাঁর Law এর পড়াশোনা মাঝখানেই ছেড়ে দেন এবং তাঁকে একজন প্রচারক রূপে উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় |
সেখানে তিনি দীনদয়াল উপাধ্যায়ের সাথে মিলে রাষ্ট্রধর্ম (হিন্দি মাসিক), পঞ্চজন্য (হিন্দি সাপ্তাহিক), দৈনিক স্বদেশ ও বীর অর্জুন নামক ইত্যাদি সব খবরের কাগজের হয়ে কাজ করতে থাকেন |
তুমি কি জানো? অটল বিহারী বাজপেয়ী কোনোদিন বিয়ে করেননি, সারাজীবনই তিনি অবিবাহিতই ছিলেন | কিন্তু তাঁর নমিতা নামে একটি মেয়ে ছিল যাকে তিনি দত্তক নিয়ে ছিলেন |
নমিতা, ভারতীয় সাংস্কৃতিক নৃত্য এবং গানকে বেশ পছন্দ করতেন এবং সেই সাথে তিনি প্রকৃতিপ্রেমীও ছিলেন বলে জানা যায় |
রাজনৈতিক জীবন – Atal Bihari Vajpayee Political Career
আমদের দেশের পূর্ব প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী স্বাধীন ভারতীয় রাজনীতির এমন এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যাঁর রাজনৈতিক অবদান কোনোদিন ভোলার নয় |
একসময় ছিল যখন বাজপেয়ীর অমূল্য বক্তৃতা, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুও একদম মুগ্ধ হয়ে শুনতেন |
তোমায় এটাও জানিয়েদি যে, তিনি একসময় ভারতের বিদেশ মন্ত্রী হিসাবেও নির্বাচিত হন |
যখন বিজেপির অস্তিত্ব ভারতীয় সংসদ থেকে প্রায় মুছে যাওয়ার জোগার, তখন বাজপেয়ীর নেতৃত্বেই বিজেপি আবার রাজিনীতিতে নতুন জীবন পায় এবং দেশে তাঁর দল ক্ষমতাও আসে |
১৯৬৮ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তিনি জনসংঘের সভাপতি ছিলেন এবং মরারজি দেসাইয়ের মন্ত্রিসভায়, তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী হিসাবেও নিযুক্ত ছিলেন একসময় |
বিরোধী দলের অন্য সহকর্মীদের মতোই তাকেও জরুরী অবস্থার সময় জেলে পাঠানো হয়েছিল।
১৯৭৭ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে তাঁকে বিদেশমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত করা হয় ।
এই সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র অধিবেশনে গিয়ে হিন্দী ভাষায় নিজের বক্তব্য পেশ করেন যা তিনি তাঁর জীবনের একটি সেরা মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন ।
১৯৮০ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিজেপির সভাপতি ছিলেন এবং এই সময়ে তিনি বিজেপি পার্লামেন্টারি পার্টির নেতাও ছিলেন।
অটল বিহারী বাজপেয়ী এখনও পর্যন্ত নয়বার লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন |
১৯৮৪ সালে তাঁকে গোয়ালিয় জেলার নির্বাচনে কংগ্রেসের একজন বিখ্যাত নেতা মাধবরাও সিন্ধিয়ার কাছে অনেক ভোট হারতে হয় | তিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ এবং ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার একজন সদস্য ছিলেন।
Read More: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী
১৯৬৬ সালে ভারতীয় জনসাধারণ, রাজিনীতিতে একটি পরিবর্তনের আশায় ছিল, তাই বেশিরভাগ মানুষ অবশেষে তখন বিজেপিকে বিপুল ভোটে জয়ী করে আনলো |সেইসাথে প্রথমবারের জন্য অটল বিহারী বাজপেয়ীও ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন |
কিন্তু এই প্রধানমন্ত্রীত্ব তাঁর বেশিদিন কপালে ছিলোনা | মাত্র ১৩ দিনের মাথায় সব কিছু শেষ হয়ে যায় |
কিন্তু এইসবের পরেও বাজপেয়ীর মনোবল একদমই ভাঙ্গেনি | তিনি আবার ১৯৮৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর পার্টির বাকি সহকর্মীদের সাথে একজোট হয়ে, লোকসভায় তাঁর পার্টির সর্বাধিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অবশেষে প্রমান করেন এবং আবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠেন |
অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময়ে, ভারত একটি পারমাণবিক শক্তি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হয়ে ওঠে | তিনি পারস্পরিক বাণিজ্য ও ভ্রাতৃত্বকে উন্নীত করার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের কাশ্মীর সমস্যা সমাধান করার অনেক চেষ্টা করেছিলেন ।
কিন্তু ১৩ মাস ব্যাপী মহান কর্মকান্ডের পর, তাঁর সরকার রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে মাত্র এক ভোটে হেরে যায় |
এরপর তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন |
তারপর, ১৯৯৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি, কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের নৃসংশ আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার ব্যবস্থা করেন এবং অবশেষে কার্গিলের যুদ্ধে ভারত জয়ের মুখ দেখে |
যুদ্ধ শেষে কিছুদিন পরেই,পুনরায় নির্বাচন হয় এবং জনগণের সমর্থনে তাঁর সরকার আবার পুন:গঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সেইসময় তিনি তাঁর ক্ষমতার কিছু বিশেষ পরিচয় দেন সকলের মাঝে।
Important work of Atal Bihari Vajpayee
অটল বিহারীর এই সরকার সফল ভাবে তার মেয়াদ শেষ করে এবং এর মাধ্যমে তিনি দেশে জোটের রাজনীতিকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছিলেন | ওই পাঁচ বছরে, এনডিএ সরকার দরিদ্র, কৃষক এবং যুবকদের জন্য অনেক সুন্দর প্রকল্পের বাস্তবায়নও করেছিল |
তাঁর সরকার, ভারতের চার দিকে জাতীয় সড়কের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করার জন্য স্বর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্পটি শুরু করে|
যারফলে দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই ও মুম্বাইয়কে জাতীয় সড়কের মাধ্যমে যুক্ত করা হয় | এরফলে ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থারও অনেক উন্নতি সাধন হয় |
অবিরাম অসুখের কারণে এরপর Atal Bihari Vajpayee রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অটলজী ভারতীয় রাজনীতিকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে চলে গেছিলেন, যা সবসময় মনে রাখার মত |
Read More:- ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর জীবনী
দেশ ও বিদেশে তাঁকে অনেক পুরস্কার ও সন্মানেও ভূষিত করা হয়েছিল| ২৫শে ডিসেম্বর ২০১৪ সালে, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে বাজপেয়ীজীকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান “ভারত রত্ন” হিসাবে ভূষিত ঘোষণা করা হয় ।
তাঁকে সম্মান জানাতে, ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী নিজেই তাঁর বাড়ি ২৭ শে মার্চ ২০১৫ সালে গেছিলেন পুরস্কারটি দেওয়ার জন্য । তাঁর জন্মদিন ২৫শে ডিসেম্বরকে “good governance day” হিসাবে উদযাপন করা হয় সারা ভারতে।
Atal Bihari Vajpayee Awards
অটল বিহারী বাজপেয়ীর জীবনাবসান – Atal Bihari Vajpayee Death
অটল বিহারী বাজপেয়ী তাঁর শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন ১৬ই অগাস্ট ২০১৮ সালে, All India Institute of Medical Sciences (AIIMS) হাসপাতালে বিকেল ৫:০৫ মিনিটে | মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল প্রায় ৯৩ বছর | | তাঁর মৃত্যুতে গোটা ভারতবর্ষের মানুষ আজ গভীর ভাবে শোকাহত |
Hope you find this post about “Biography of Atal Bihari in Bengali” useful and inspiring. if you like this Information About Atal Bihari Vajpayee then please share on Facebook & Whatsapp. And If You Want to Share Your Own Motivational Poems & Travel Stories, Then Please Check Out Here.
শেয়ার করুন: on Twitter on Facebook on Google+